বিদেশী সরকারি কর্মকর্তা (এ১/এ২)
বিদেশী কূটনীতিক, সরকারি কর্মকর্তা ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা নিজ দেশের সরকারি কাজে যুক্তরাষ্ট্রে যেতে চাইলে দূতাবাসে এ-ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন।
আপনি জাতীয় সরকারের পক্ষে সরকারি কাজ সম্পাদন করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র যেতে চাইলেই কেবল এ-ভিসা পেতে পারেন। যদি কর্মকর্তারা বেসরকারি কোনো অনুষ্ঠানে- যার প্রকৃতি বাণিজ্যিক বা প্রতিযোগিতামূলক- যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করতে চান, তবে তাদের অন্য ক্যাটাগরির ভিসার আবেদন করতে হবে। এ ধরনের ভ্রমণের জন্য এ-ভিসা দেওয়া হয় না। দাপ্তরিক কাজ সম্পাদনে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণেচ্ছু বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার বা প্রাদেশিক পর্যায়ের কর্মকর্তারা এ-২ ভিসার জন্য যোগ্য নন।
ডিএস-১৬০: অনলাইন নন ইমিগ্র্যান্ট ভিসা আবেদন নিশ্চিতকরণ পৃষ্ঠা
- ডিএস-১৬০-এ সরবরাহকৃত তথ্য সত্যি ও যথাযথ হতে হবে
- পাসপোর্টে পূর্ণ বানানের স্বাক্ষর না থাকলে ডিএস-১৬০ অনলাইন ভিসা আবেদনে আবেদনকারীর পূর্ণ নামসহ স্বাক্ষর থাকতে হবে।
- যদি ডিএস-১৬০ অনলাইন ভিসা আবেদনে আবেদনকারীর পূর্ণ নামসহ স্বাক্ষর না থাকে, তবে ডিএস-১৬০ নিশ্চিতকরণ পৃষ্ঠায় পূর্ণ নাম লিখিত থাকতে হবে।
- ডিএস-১৬০ আবেদনে একটি বৈধ ছবি আপলোড করতে হবে
- ডিএস-১৬০ অনলাইন আবেদনে পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিতে ব্যর্থ হলে দাপ্তরিক এ এবং জি ভিসা আবেদন সময়মতো এগোনোর ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে
৪. যুক্তরাষ্ট্রে সম্ভাব্য অবস্থানের চেয়ে অন্তত ছয় মাস বেশি মেয়াদ রয়েছে এমন মেশিন রিডেবল (যন্ত্রে পাঠযোগ্য) পাসপোর্ট থাকতে হবে। কেবলমাত্র সাম্প্রতিকতম পাসপোর্টই জমা দিতে হবে
৫. একটি ছবি (যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ছবির বিষয়ে নির্দেশনা পাওয়া যাবে এখানে: www.ustraveldocs.com/bd
পরিবারের সদস্যদের ক্ষেত্রে, জমা দিন:
১. একটি পাসপোর্ট (যুক্তরাষ্ট্রে সম্ভাব্য অবস্থানের চেয়ে অন্তত ছয় মাস বেশি মেয়াদ রয়েছে এমন)
২. ডিএস–১৬০: অনলাইন নন ইমিগ্র্যান্ট ভিসা আবেদন নিশ্চিতকরণ পৃষ্ঠা। ডিএস-১৬০ আবেদনে অবশ্যই একটি বৈধ ছবি আপলোড করতে হবে।
৩. আবেদনের তারিখের আগের ছয় মাসের মধ্যে তোলা একটি ছবি। যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা পাওয়া যাবে এখানে- http://www.ustraveldocs.com/bd
৪. বিদেশী সরকার/বিদেশী মিশন/আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে একটি পরিচয়পত্র (এলওআই), যাতে উল্লেখ থাকবে
- আবেদনকারীর স্বামী/স্ত্রী ও অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদের নাম ও জন্মতারিখ;
- মূল আবেদনকারীর অবস্থান ও পদবি;
- মূল আবেদনকারীর সঙ্গে সম্পর্র্ক
- সফরের বা কাজের জায়গা;
- সফরের কারণ;
- কাজের সংক্ষিপ্ত বিবরণ;
- সফরের তারিখ;
- মূল আবেদনকারীর সম্ভাব্য যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানের বা কাজের সময়
- মূল আবেদনকারীর নোট ভার্বাল, জিও এবং সংশ্লিষ্ট সহায়ক নথিপত্রের অনুলিপি (পরিবারের সদস্যদের আলাদাভাবে ভ্রমণের ক্ষেত্রে)
আবেদনপত্র জমাদান
দাপ্তরিক ভিসা আবেদন জমা দিতে বিদেশী সরকার/আন্তর্জাতিক সংস্থার মনোনীত প্রতিনিধিকে বারিধারার মাদানি অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কনস্যুলার শাখায় যেকোনো রোববার, সোমবার, বুধবার ও বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টা থেকে ১১:৩০ এর মধ্যে আসতে হবে। কনস্যুলার গেট-২ এ যাওয়ার জন্য মনোনীত প্রতিনিধিকে অবশ্যই মাদানি অ্যাভিনিউয়ের নিরাপত্তা রক্ষীর কাছে কূটনৈতিক নোট/ নোট ভার্বাল ও একটি বৈধ ফটো আইডি প্রদর্শন করতে হবে। নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর মনোনীত প্রতিনিধিকে কনস্যুলার অভ্যর্থনা কক্ষে যেতে হবে।
সব কূটনৈতিক/দাপ্তরিক ভিসার আবেদন অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার সম্ভাব্য তারিখের ৩০ দিন আগে জমা দিতে হবে।
আবেদনপত্রের বাহককে একটি চিঠি এবং বারকোড নম্বরসহ ডিএস-১৬০-এর একটি কপি দেওয়া হবে যা দিয়ে আবেদনের অগ্রগতি অনলাইনে পর্যবেক্ষণ করা যাবে। এই চিঠি ও বারকোড নম্বরসহ ডিএস-১৬০ নিশ্চিত করে যে দাপ্তরিক নন ইমিগ্র্যান্ট এ এবং জি ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে।
পাসপোর্ট সংগ্রহ
কনস্যুলার শাখায় আবেদন জমা পড়ার ৩০ দিনের মধ্যে সরকারি/কূটনৈতিক ভিসা সাধারণভাবে তোলার জন্য প্রস্তুত থাকবে। যখন আবেদনের স্ট্যাটাস পরিবর্তিত হয়ে ‘ইস্যু করা হয়েছে’ দেখানো হবে তখন ভিসা সম্বলিত পাসপোর্ট সংগ্রহের জন্য তৈরি থাকবে। আবেদনকারী /বিদেশী সরকারি অফিস/আন্তর্জাতিক সংস্থা তাদের অনুমোদিত বাহক পাঠিয়ে এটি সংগ্রহ করতে পারে।
কখন: আবেদনটির স্ট্যাটাস ‘ইস্যু করা হয়েছে’ মর্মে পরিবর্তিত হওয়া থেকে দূতাবাসের তিন (৩) কার্য দিবস পর
কোথায়: ঢাকার বারিধারার যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের কনস্যুলার শাখা
সময়: রোববার, সোমবার, বুধবার এবং বৃহস্পতিবার ঠিক সকাল ১১:০০ টায়
কী আনবেন: ডিএস-১৬০ নিশ্চিতকরণ পেজ এবং অনুমোদিত ব্যক্তির বৈধ ফটো আইডিসহ আবেদনকারীর থেকে একটি অনুমোদনের চিঠি।
কিছু ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত সাক্ষাতকারের প্রয়োজন হয়। যদি তা হয় তবে মনোনীত প্রতিনিধি সাক্ষাতকারের অ্যাপয়েনমেন্টের সময়সূচি কীভাবে স্থির হবে তার নির্দেশনা সম্বলিত চিঠি পাবেন। দয়া করে মনে রাখবেন, কিছু ক্ষেত্রে বাড়তি কিছু প্রক্রিয়া দরকার হতে পারে। এটি ভিসা দেওয়ার সময়সীমার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। যেসব ক্ষেত্রে বাড়তি প্রক্রিয়ার দরকার হয়, সেসব ক্ষেত্রে অবশ্যই ত্রিশ দিনের বেশি সময় লাগবে। অনুগ্রহ করে আপনার আবেদনের অবস্থা জানতে প্রতিদিন দেখতে থাকুন। সর্বশেষ অবস্থা জানতে আপনার ডিএস-১৬০ ফর্মে পাওয়া বারকোড নম্বরটি ব্যবহার করুন।
জরুরি ভ্রমণের জন্য পাসপোর্ট প্রত্যাহার/ ফেরত নেওয়া
কোন আবেদন প্রক্রিয়াধীন থাকা অবস্থায় আবেদনকারীরা ব্যক্তিগত/ অফিসিয়াল ভ্রমণজনিত প্রয়োজনে তাদের পাসপোর্ট ফেরত চাইতে পারেন। এরকম ক্ষেত্রে আবেদনকারীকে তার মনোনীত প্রতিনিধির, যিনি পাসপোর্ট সংগ্রহ করবেন তার ন্যাশনাল আইডি নম্বর এবং/ অথবা অফিসিয়াল আইডি ব্যাজ সম্পর্কিত তথ্য আমাদের ইমেইল করতে হবে। কনস্যুলার শাখা থেকে পাসপোর্ট ফেরত দেওয়া হবে। মনোনীত প্রতিনিধিকে বৈধ ফটো আইডি, ডিএস-১৬০ নিশ্চিতকরণ পেজ, পাসপোর্ট সংগ্রহের অনুমোদনের চিঠি এবং অ্যাপয়েন্টমেন্ট প্রাপ্তির ইমেইলের একটি কপি সহ নির্ধারিত তারিখে কনস্যুলার বিভাগে আসতে হবে। ভ্রমণ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবেদনকারীকে তাদের পাসপোর্ট আবার জমা দিতে হবে। অনুগ্রহ করে মনে রাখবেন, পাসপোর্ট ফিরিয়ে নেওয়া হলে সাধারণত আবেদন প্রক্রিয়া শেষ করা স্থগিত থাকে।
ব্যক্তিগত উপস্থিতি ও ভিসা ফি
সরকারি/ দাপ্তরিক কাজে যারা যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করতে চান তাদের ‘এ’ ও ‘জি’ ভিসার জন্য ব্যক্তিগত উপস্থিতির সাধারণত দরকার হয় না। মেশিন-রিডেবল ভিসা (এমআরভি) ফি-র বিষয়ে জ্ঞাতব্য হচ্ছে, নন-ইমিগ্র্যান্ট এ ও জি ভিসার ক্ষেত্রে মনোনীত ব্যক্তিদের ১৬০ ডলারের ভিসা প্রক্রিয়ার ফি দিতে হবে না।
‘এ’ ও ‘জি’ ভিসার আবেদনকারীদের নিজস্ব কর্মী
এওয়ান, জিওয়ান, জিফোর বৈধ ভিসাধারীদের ব্যক্তিগতকর্মী, সহকারী অথবা গৃহকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তিদের এথ্রি ও জিফাইভ ভিসা ইস্যু করা হতে পারে। এসব আবেদনকারীকে বায়োমেট্রিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট এবং সাক্ষাৎকার দিতে হবে।
কূটনীতিকদের জন্য ভিসা ফি এবং পর্যটক হিসেবে ভ্রমণ
‘এ’ বা ‘জি’ ভিসার জন্য উপযুক্ত ব্যক্তিদের ভিসা ফি দিতে হয় না। এর পাশাপাশি, কূটনৈতিক পাসপোর্টধারী ব্যক্তিরাও ভিসার ধরন বা ভ্রমণের উদ্দেশ্য যা-ই হোক না কেন (পর্যটনসহ), মেশিনরিডেবল ভিসা (এমআরভি) ফি থেকে অব্যাহতি পেতে পারেন। আপনার যদি কূটনৈতিক পাসপোর্ট (অর্থাৎ নিয়মিত, সরকারি/ কর্মকর্তা বা বিশেষ নয়) থাকে এবং আপনি যদি পর্যটক ভিসার জন্য আবেদন করে থাকেন, তবে অনুগ্রহ করে ভিসা ফি দেবেন না, যে পর্যন্ত না কোনও কনস্যুলার অফিসার তা দিতে বলেন।
তবে কূটনৈতিক পাসপোর্ট বহনকারীদেরও অবশ্যই সশরীরে সাক্ষাৎকার এবং আঙুলের ছাপের জন্য উপস্থিত থাকতে হবে। আপনার সুবিধার জন্য আমাদের পরামর্শ হচ্ছে, আপনি এমআরভি ফি দেওয়ার আগে ইমেইল করে পর্যটক ভিসার আবেদন করতে চান এ কথাটি কনস্যুলার বিভাগকে নিশ্চিত করুন।