বাংলাদেশের প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্হান এখন দ্বিতীয়।

প্রবাসী আয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র একক মাস হিসেবে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ, প্রবাসী আয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় ২ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা
প্রবাসী আয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্চ মাসে দেশটি থেকে প্রবাসীরা পাঠিয়েছে ৩০ কোটি ৮৮ লাখ ডলার মার্কিন। যা দেশিও মুদ্রায় ২ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা (প্রতিডলার ৮৬ টাকা হারে)। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদেশ থেকে এখন দেশে টাকা পাঠানো সহজ। এছাড়া বৈধ পথে অর্থ পাঠালে মিলছে নগদ প্রণোদনা। কমেছে অর্থ উত্তলনে ঝামেলা। পাশাপাশি মহামারিতে দেশে স্বজনদের কথা বিবেচনায় নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রেে প্রবাসীরা আগের তুলনায় বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্যমতে, চলতি বছরের মার্চ মাসে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশের প্রবাসীরা ৩০৮.৮২ মিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। অতীতে একক মাসে এতো পরিমাণ রেমিটটেন্স আসেনি দেশটি থেকে। ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকা দেশটির রেমিটেন্স প্রবাহ শীর্ষে থাকা সৌদির কাছাকাছি চলে এসেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বাংলাদেশে রেমিটেন্স আহরণে বেশি ভূমিকা পালন করছেন মধ্যপ্রাচ্য ও আমেরিকা ও ইউরোপের দেশে থাকা প্রবাসীরা।
বাংলাদেশে বরাবরই সৌদি আরব থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিটেন্স আসছে। এরপরই ছিল সংযুক্ত আরব আমিরাতের অবস্থান। তা ডিঙিয়ে দ্বিতীয়তে এখন যুক্তরাষ্ট্র আর তৃতীয়তে উঠে এসেছে যুক্তরাজ্য। এক সময় দ্বিতীয় থাকা আরব আমিরাতের অবস্থায় এখন চতুর্থ অবস্থানে।

বাংলাদেশের প্রবাসীদের বড় বাজার মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। বিভিন্ন সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ২২ লাখের মতো বাংলাদেশি অভিবাসী সৌদি আরবে কর্মরত রয়েছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, মার্চ মাসে রেমিটেন্স আহরণে শীর্ষে থাকা সৌদি আরর থেকে এসেছে ৩৭ কোটি ৭৫ লাখ ডলার। দ্বিতীয়তে থাকা যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসা প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ৩০ কোটি ৮৮ লাখ ডলার। যুক্তরাজ্যের থেকে এসেছে ২১ কোটি ৪১ লাখ ডলার। আরব আমিরাত থেকে পাঠিয়েছে ১৮ কোট ৪১ লাখ ডলার। এছাড়া মার্চে কুয়েত থেকে এসেছে ১৪ কোটি ৪৪ লাখ ডলার, কাতার ১১ কোটি ৯৫ লাখ, ইতালি ৮ কোটি ৫৪ লাখ, মালয়েশিয়ার থাকা বাংলাদেশি প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ৮ কোটি ১৪ লাখ, ওমান থেকে পাঠিয়েছেন ৭ কোটি ৪৩ লাখ এবং বাহরাইন থেকে রেমিটেন্স এসেছে ৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলার।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মার্চ মাসে প্রবাসীরা ১৮৬ কোটি ডলার রেমিটেন্স দেশে পাঠিয়েছেন। যা আগের মাসের চেয়ে ২৪ শতাংশ বা ৩৬ কোটি ৫৫ লাখ ডলার বেশি। গত ফেব্রুয়ারিতে রেমিটেন্স এসেছিল ১৪৯ কোটি ডলার। তবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে রেমিটেন্স বাড়লেও গত বছরের একই সমেয়র তুলনা করলে তা কমেছে। মার্চ মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে ১৮৫ কোটি ৯৯ লাখ (১.৮৬ বিলিয়ন) মার্কিন ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন। প্রবাসী আয়ের এ অংক আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫ কোটি ১০ লাখ ডলার বা প্রায় ৩ শতাংশ কম। গত বছরের মার্চে রেমিটেন্স এসেছিল ১৯১ কোটি ৯ লাখ ডলার।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে ৯ মাসে (জুলাই-মার্চে) দেশে রেমিটেন্স এসেছে এক হাজার ৫২৯ কোটি ৮৫ লাখ ডলার (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ২০ পয়সা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ এক লাখ ৩১ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা)। এ অংক আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৩৩০ কোটি বা প্রায় ১৮ শতাংশ কম। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রথম ৯ মাসে রেমিটেন্স এসেছিল এক হাজার ৮৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার।

গত ২০২০-২১ অর্থবছরের পুরো সময়ে রেমিটেন্সের উল্লম্ফন ছিল। ওই অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার রেমিটেন্স পাঠান প্রবাসীরা, যা তার আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি। গত অর্থবছরের ১২ মাসের মধ্যে সাত মাসেই ২০০ কোটি ডলারের বেশি রেমিটেন্স এসেছে দেশে।


২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিয়ে আসছে সরকার। চলতি বছরের প্রথম দিন থেকে সরকার রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়াতে নগদ প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ করেছে। অর্থাৎ এখন কোনো প্রবাসী ১০০ টাকা দেশে পাঠালে তার সঙ্গে আরও আড়াই টাকা যোগ করে মোট ১০২ টাকা ৫০ পয়সা পাচ্ছে সুবিধাভোগী।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, বর্তমানে এক কোটি ২০ লাখ বাংলাদেশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন।

 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here