আমেরিকান ভিসা নিয়ে আমাদের ভাবনা

আমেরিকার টুরিস্ট ভিসা নিয়ে বিভিন্ন রকমের মন্তব্য শুনেছি কেউ জেনে মন্তব্য করেন আবার কেউ অনুমান করে কথা বলেন যেভাবেই বলুক কথাগুলি আসলেই সকলের জন্য ক্ষতিকর।

আপনি যদি আমেরিকার ভিসা আবেদন করতে চান, তাহলে সাধারণ কমন কিছু বিষয়ে জানতে হবে।বুঝতে হবে ভিসা আবেদনের জন্য দূতাবাসের কি কি রিকয়ারমেন্ট আছে।অন্যন্ন দেশের মতো কোন নির্দিষ্ট ডকুমেন্ট ইউএস কতৃপক্ষের নেই, ভ্রমন ভিসার জন্য সহজ একটি চাহিদা হলো আপনি যে পেশায় থাকেন নাকেন আপনি এই দেশে ভালো আছেন যেই রকম ভালো থাকা অন্য কোনদেশে থাকা আপনার দ্বারা সম্ভব নয়।
এটা প্রমান করার জন্য আপনি যে কোন ডকুমেন্ট দেখাতে পারেন।

আমেরিকার টুরিস্ট পাঁচ বছরের মাল্টিপল ভিসা বাংলাদেশ থেকে খুবই সহজ। আমাদের প্রধান হলো মানুষ কি বলে সেই কথাটা বিশ্বাস করে বসে থাকি।আমাদের সমাজে কিছু মানুষের অভ্যাস হলো জানুক আর না জানুক নিজেকে সবজান্তা হিসাবে জাহির করতেই হবে, আর এই জাহির করতেই এমন কিছু কথা বলে যা কোন আইন আদালতে খাটেনা। আমার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতায় আমি যে সকল সমস্য গুলির কারনে মানুষ আমেরিকা বা কানাডাএইসকল দেশে ভিসা আবেদনে ভয় পায় বা ভুল করে থাকে আজ সেই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করব।

১-আমেরিকার ভিসা করতে অনেক টাকা লাগে।
উত্তর-আমেরিকার টুরিষ্ট ভিসা পেতে আসলে টাকাটা মেইন বিষয় নয়।যেহেতু এই ভিসা কন্টাকে হয় না তাই টাকা বেশী লাগেনা। আপনার টাকার চেয়ে ডকুমেন্টের প্রয়োজন বেশী হয়।অভিজ্ঞ লোকের সহযোগিতা নিতে হলে কিছু টাকা খরচ বেশী হবে এটাই স্বাভাবিক।

২-আমেরিকার ভিসা আবেদনের আগে অনেক দেশ ভিজিট করা লাগে।
উত্তর – এই কথাটির সত্যিই কোন ভিত্তি নেই।এই কথাটি শুধুমাত্র একটা জিনিস প্রমান করে আপনি ভ্রমনে অভ্যস্ত।সাদা পাসপোর্টে ভিসা হয় এমন বহু উদহারন আছে।

৩-ইউ এস ভিসা আবেদন করতে হইলে বড় ব্যবসায়ী হওয়া লাগে ও আমেরিকার ভিসা পাইতে কোটি কোটি টাকা ব্যংক ষ্টেট মেন্ট ও এফডিআর থাকা লাগে।
উত্তর-এই কথা সম্পূর্ণ ভুল ধারনা। কারন যদি শুধুমাত্র ব্যবসায়ীদের ভিসা হতো।তাহলে যারা গান গায় বা শিল্পী,নর্তকী,ডাক্তার,এডভোকেট,সাংবাদিক,শিক্ষক,চাকুরীজিবী,হুজুর,রাজনিতিবীদ ইত্যাদি এই সব পেশার মানুষের তো বড় ব্যংক ষ্টেট মেন্ট নেই, তারা ভিসা কিভাবে পায়?
মূল কথা হলো আপনাকে প্রমান করতে হবে আপনি বতর্মানে বাংলাদেশে যেই পেশায় আছেন বা যেভাবেই আছেন আপনি পরিবার পরিজন নিয়ে অনেক ভালো আছেন বা এমন একটি অবস্থায় আছেন যেই অবস্থান আপনি বিশ্বের কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়।
যেমন ধরুন আপনি একজন শিল্পী আপনার কাছে মূল্যবান হচ্ছে আপনার শ্রোতা। এই দেশে আপনার অনেক ভক্তরা আছে তাদের নিয়েই আপনি সুখী।এটা প্রমান করাতে যা প্রয়োজন তাই দেখাতে হবে।

৪-অনেক শিক্ষিত না হলে আমেরিকার ভিসা পাওয়া যায় না?
উত্তর-আপনাকে বুঝতে হবে ও যোক্তির কাছে হার মানতে হবে।বেড়াতে যেতে কোন শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রয়োজন বিশ্বের কোন দেশের ইমেগ্রেশন আইনে নেই। আমেরিকার রাষ্টিয় আইনেও নেই।

৫- আমারতো আত্মীয় স্বজনদের মধ্য আমেরিকায় কেউ নাই আমাকে ভিসা দিবেনা?
উত্তর -ভ্রমন ভিসা আবেদনের জন্য আত্মীয় স্বজনদের প্রয়োজন নেই। বরং কিছু সময় আত্মীয় স্বজন আছে জানলে ভিসা দিতে চায়না।তখন মনে করে আপনি বেড়াতে যাওয়ার পর থেকে যেতে পারেন,সেই বিষয়ে আপনার আত্মীয়রা আপনাকে সহযোগীতা করতে পারে।

৬) ভিসা যদি এত সহজ হইতো তাহলে মানুষ ২৫ /৩০ লক্ষ টাকা খরচ করে পানামা-মেস্কিকো দিয়ে যেতো না?
উত্তর -কিছু কিছু মানুষ আছে যারা নিজেদের খুব চালাক মনে করে।এরা নিজেকেই বিশ্বাস করতে পারেনা অপরকে কিভাবে বিশ্বাস করবে? যখন কোন ভিসা এজেন্ট এদের বলে “আপনার কিছু লাগবেনা ভিসা হওয়ার পর টাকা,” এই কথাই যথেষ্ট জীবনের শ্রেষ্ঠ ভুলটি করার জন্য। অনভিজ্ঞ বা আনাড়ি এজেন্সির মাধ্যমে ভিসা আবেদন করে রিফিউজ হয়। মনে রাখবেন যারা কাজ যানে তারা কখনো বলেনা আপনার সকল ডকুমেন্টস আমরা দিব আপনি শুধুমাত্র পাসপোর্ট ওছবি দিবেন।আপনি যদি একবার এই ধরনের প্রতারকদের মাধ্যমে ভুয়া ডকুমেন্টস সাবমিট করেন পরবর্তীকালে ভিসা পাওয়ার যোগ্য ডকুমেন্ট নিয়েও ভিসা না পাওয়ার সম্ভাবনা বহুগুন বেড়ে যাবে। এর পরও এই ধরনের হলেও এই ধরনের মানুষগুলো আবার যখন শুনে পৌঁছনোর পর টাকা তখন কোন কিছুই না ভেবেই মানব পাচার চক্রের বলি হলে যায়। পানামা হয়ে যেতে হলে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর বন আমাজনের ভিতর দিয়ে ১০ /১২ টি বডার পার হতে হয় কোন বর্ডারেই সিকিউরিটিরা আপনার জন্য ফুলের মালানিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেনা,তারা স্বয়ংক্রিয় মেশিনগান দিয়ে গুলি করতে একমিনিট ও ভাবেনা।প্রথমত মনেরাখতে হবে যতজন মানুষ ব্রাজিল -পানামা হয়ে আমেরিকা যেতে চায় তার ৫০% ও সুস্থ ভাবে বেঁচে আমেরিকা পৌঁছতে পারে না।সত্যিই বোকা এরা যখনি শুনে পৌঁছনোর পর টাকা তখন ভুলে যায় যাওয়ার পথে এখটি গ্রুপ কাজটি করেনা একেক গ্রুপ একেটা নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছনোরর দায়িত্ব পালন করে তারপর

যাত্রীদের জিন্মি করে টাকা আদায় করে নেয়। তাই বলি নিজে একটু সচেতন হবেন ও অপরকে সতর্ক করে তুলবেন।

৭)- ভিসা হওয়ার পর আমি যেতে পারবো তো?
উত্তর -প্রথমে মনে রাখতে হবে আমেরিকা আর মালয়েশিয়া এক না। যারা এই ভাবনা ভাবে তারা মালয়েশিয়া যাবারও যোগ্য নয়।গত ৩০ বছরের ইতিহাসে এই ধরনের ঘটনা হয়নি যিনি আমেরিকার ভিসা পাওয়ায় পর যেতে পারেনি। যদি বাংলাদেশে আপনার কোন অপরাধ না থাকে বা রাষ্ট্রিয় কোন আপত্তি না থাকে।

৮)-ভিসা নিয়ে আমেরিকা যাওয়ার পর যদি আমাকে আমরিকান এয়ারপোর্ট থেকে ফেরত পাঠিয়ে দেয়?
উত্তর-এমন কোন উদহারন এখন পর্যন্ত হয়নি।এছাড়াও আমেরিকান ইমিগ্রেশনের পরিপন্থী কোন কাজ না করলে এমন কোন সম্ভাবনা ও নেই।

৯)-টুরিষ্ট ভিসায় গেলে আমি তো ফেরত চলে আসতে হবে?
উত্তর – টুরিষ্ট ভিসা অর্থ হলো বেড়াতে যাবেন ও একটি নির্দিষ্ট থাকবেন তারপর চলে আসবেন। আপনি একবার যাবার পর ৬ মাস থাকতে পারবেন। আর ছয় মাসের পর থাকতে চাইলে আপনাকে একজন আইনজীবীর সহায়তা নেয়াই বুদ্ধিমানের মতোকাজ হবে।

১০)আমেরিকায় আমি কাজ পাবো কিভাবে?
উত্তর -আপনি কাজ করতে চাইলে আমেরিকায় একদিনও বেকার থাকতে হয় না। আমেরিকায় অনেক বাংলাদেশি আছে প্রথমেই আপনি সেখানে বাংলাদেশিদের কাছে সহযোগিতা চাওয়াটাই সঠিক হবে।

১১)- ভিজিট ভিসায় গেলে আমি ওয়ার্ক পারমিট কিভাবে পাবো?
উত্তর – এই বিষয়ে আপনি এডভোকেটের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে।

১২)- আবেদন করার পর ভিসা না দিলে আমার পার্সপোটে সিল মেরে দিলে আমার পাসপোর্ট বাতিল হয়ে যাবে বা আমি আর কোন দেশে ভিসা পাবো না?
উত্তর-আমেরিকান দূতাবাসে ভিসা আবেদন করলে ভিসা দিতে পারে আবার নাও দিতে পারে কিন্তু পাসপোর্টে কোন প্রকার রিফিউজ সিল মারবে না।

১৩) -একবার আবেদন করলে কমপক্ষে আর পাঁচ বছর আবেদন করতে পারবোনা?
উত্তর – একবার আবেদন করার পর ইচ্ছে করলে পরের দিন ও আবার আবেদন করতে পারবেন। তবে আপনাকে আবার ডি এস ১৬০ ফরমটি পুরন করে আবার ভিসা ফ্রি প্রদান করে নতুন ভাবে ডেট নিজে আসতে হবে

১৪) আমার তো দাঁড়ী আছে আমাকে ভিসা দিবেনা।আমেরিকায় তো হুজুর মানুষকে ভিসা দেয় না?
আমার পড়ালেখা তো মাদ্রাসার আমাকে ভিসা দিবেনা?
উত্তর– অনেকেই মনে করে হুজুরদের ইউএস ভিসা দেয়না।আপনি জানলে অবাক হবেন তাবলীগের পুরো টিমকেও ইউএস ভিসা দিয়ে থাকে। এটাই বাস্তবতা।

১৮-আমেরিকার স্হায়ী ভিসার জন্য আমার আবেদন করা আছে।আমাকে কি টুরিষ্ট ভিসা দিবে? বা আমার স্হায়ী ভিসার জন্য আবেদন করা আছে এমতাবস্থায় টুরিষ্ট ভিসার আবেদন করলে কি আমার পূর্বের আবেদনের ক্ষতি হবে?
উত্তর – যেহেতু আপনার আবেদন করা আছে প্রথমেই মনে রাখতে হবে টুরিষ্ট ভিসায় আবেদন করার সময় অবশ্যই পৃর্বের আবেদনের কথা উল্লেখ করতে হবে। সেই ক্ষেত্রে আপনার ভিজিটর ভিসা পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
১৯-আমেররিকার ভিসা এত সহজ না?

উত্তর -আপনি যদি সঠিক নিয়ম সর্ম্পকে জেনে বুঝতে পারেন দূতাবাস ভিসা দেয়ার জন্য মূলত আপনার সম্পর্কে কি জানতে চায়? আর জানার পর সঠিক নিয়ম মেনে আবেদন করুন অবশ্যই আপনি ভিসা পাবেন।

আরো বিস্তারিত কিছু জানতে আমাকে কল করুন +8801973151301 (হোয়াটসঅ্যাপ )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here